মানুষ স্কেচ করে কল্পনাকে দৃশ্যায়ন করতে। মানুষের কল্পনাকে বাস্তবায়নের একটি উপায় হলো স্কেচ আঁকা। স্কেচের মাধ্যমে মানুষ তার মনের ছবিকে কাগজে ফুটিয়ে তুলতে পারে। স্কেচ আঁকা একটি সৃজনশীল কাজ। এটি মানুষের চিন্তাভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রকাশ করে।

স্কেচ আঁকার জন্য সাধারণত কাগজ, পেন্সিল বা কলম ব্যবহার করা হয়। স্কেচের ধরন অনুযায়ী বিভিন্ন রকমের সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, মানুষের মুখ আঁকার জন্য সাধারণত ফাউন্টেন পেন ব্যবহার করা হয়। কারণ ফাউন্টেন পেনের মাধ্যমে লাইনগুলো মসৃণ ও স্পষ্ট হয়। স্কেচ আঁকার বিভিন্ন ধরন রয়েছে।

যেমন, ফরেনসিক স্কেচ, পেশাদার স্কেচ, শিল্প স্কেচ, ইত্যাদি। বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির মাধ্যমে স্কেচকে বাস্তব রূপে রূপান্তর করা সম্ভব। “CycleGAN” নামক একটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্কেচকে বাস্তব ছবির মত ফুটিয়ে তোলা যায়। এই প্রযুক্তিতে একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম স্কেচের ছবিটিকে বিশ্লেষণ করে এবং তার সাথে মিল রেখে একটি বাস্তব ছবি তৈরি করে।

এই প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে অপরাধী শনাক্তকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কারণ, বর্তমানে অপরাধী শনাক্তকরণে প্রফেশনাল আর্টিস্টদের দ্বারা ফরেনসিক স্কেচ করা হয়। কিন্তু এই স্কেচগুলোতে প্রায়ই বাস্তব চেহরার সাথে বিস্তর ফারাক দেখা যায়। ফলে অপরাধী শনাক্তকরণে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। এই প্রযুক্তির ব্যবহারে এই সমস্যা দূর হবে।

স্কেচ টু ফটো প্রযুক্তিতে কিছু দুর্বলতা রয়েছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহারেও বাস্তব ছবির সাথে স্কেচ এর কিছু ফারাক রয়েই যায়। এই সমস্যা সমাধানে “Yuanzhe Gu” প্রস্তাব করেন “স্কেচ টু স্কেলেটন টু ফটো” করার। এই প্রযুক্তিতে প্রথমে স্কেচ কে একটা কঙ্কাল আকৃতি প্রদান করা হবে এবং পরে তা থেকে ছবিতে রূপান্তর করা হবে।

এতে আকৃতিগত সমস্যা দূরীভূত হবে এবং বাস্তবের সাথে ফারাক কমে আসবে। বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির মাধ্যমে স্কেচকে বাস্তব রূপে রূপান্তর করা একটি চমকপ্রদ আবিষ্কার। আশা করা যায় এই প্রযুক্তির ব্যবহারে অপরাধী শনাক্তকরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

শারমিন আক্তার
ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং,
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।