যে দুটি প্রশ্নের উত্তর অনেকেই জিজ্ঞাসা করে তা হলঃ
প্রশ্ন-০১ঃ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি যেমন সিভিল, ইলেক্ট্রিক্যাল, কম্পিউটার এর ডিগ্রি কি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি?

প্রশ্ন-০২ঃ কখন নামের আগে ইঞ্জিনিয়ারিং লেখা যাবে?

প্রশ্ন-০১ এর উত্তরঃ

উত্তর দেয়ার শুরুতে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। কারন কথাগুলো অনেকের কাছে ভাল লাগবে না, কিন্তু বাস্তবতা এটাই। প্রথমত কথা হচ্ছে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি সিভিল, ইলেক্ট্রিক্যাল, কম্পিউটার এর ডিগ্রি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি না। শুধুমাত্র বাংলাদেশের ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় যেমন কুয়েট, বুয়েট, রুয়েট, চুয়েট এবং ডুয়েট এর সকল ডিগ্রি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি (আর্কিটেক্ট এবং ইউ,আর,পি বাদে)।

তবে কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সাবজেক্ট আই,ই,বি মেম্বারশীপ পাই তাদেরটা ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি। সহজভাবে বোঝার জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি হবে তখন, যখন সার্টিফিকেট লেখা থাকবে যেমন B.Sc. Engg. (Civil), B.Sc. Engg. (BECM), B.Sc. Engg (EEE), B.Sc. Engg. (CSE) ইত্যাদি।

এই রকম লেখা থাকলে সেই সকল ছাত্র পাশ করার পর থেকেই নামের আগে ইঞ্জিনিয়ার লিখতে পারবে। কিন্তু যদি সার্টিফিকেট এ লেখা থাকে B.Sc. in CSE (Hons.) তাহলে সেই সকল ছাত্র নামের আগে ইঞ্জিনিয়ার লিখতে পারবে না।।

প্রশ্ন-০২ এর উত্তরঃ

ইঞ্জিনিয়ার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সম্মানজনক পদবী। যে কেউ যেকোন পর্যায়ের ডিগ্রী নিয়ে নামের আগে এই শব্দটি বসাতে পারে না কিংবা নিজেকে ইঞ্জিনিয়ার বলে পরিচয় দিতে পারে না ।

কিন্তু আমাদের দেশে যত্রতত্র এর ব্যবহার লক্ষ্য করা যায় । ডাক্তার পদবী তবু কিছুটা হলেও ডিগ্রীধারীরা ব্যবহার করেন কিন্তু ইঞ্জিনিয়ার তো গলির মোড়ের ওয়ার্কশপের ওয়েল্ডিং মিস্ত্রী কিংবা মোটর মেকানিক সবাই ব্যবহার করে।

একজন ইঞ্জিনিয়ার বোধহয় নিজেকে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পরিচয় দিতে কিছুটা হলেও লজ্জা পাবেন। কিন্তু বিষয়টা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে অনেকক্ষেত্রে একজন ইঞ্জিনিয়ার চাইলেও নিজের নামের আগে ইঞ্জিনিয়ার পদবী লাগাতে পারেন না ।

আসুন প্রথমেই দেখে নিই কারা কারা নিজেকে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেনঃ

১.আইইবি (ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশ) স্বীকৃত সরকারী বা বেসরকারি বাংলাদেশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী থাকে ।
অথবা

২. স্বীকৃত বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এর সমমানের ডিগ্রী থাকে।
অথবা

৩. এএমআইই (সেকশন এ এবং বি) পাশ থাকে । উপরোক্ত ডিগ্রীধারীরা নিজেকে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন তবে নামের আগে ইঞ্জিনিয়ার পদবী ব্যবহার করতে পারবেন না।

আসুন দেখে নিই কারা কারা নিজের নামের আগে ইঞ্জিনিয়ার পদবী ব্যবহার করতে পারেন:

১. আইইবি স্বীকৃত সরকারী বা বেসরকারি বাংলাদেশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী থাকে এবং ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-র এসোসিয়েট মেম্বার হিসেবে নিবন্ধিত হন।

অথবা
২. স্বীকৃত বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এর সমমানের ডিগ্রী থাকে এবং ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-র এসোসিয়েট মেম্বার হিসেবে নিবন্ধিত হন।
অথবা
৩.এএমআইই (সেকশন এ এবং বি) পাশ থাকে এবং ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-র এসোসিয়েট মেম্বার হিসেবে নিবন্ধিত হন ।

এর বাইরে কোনও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ডিগ্রীধারী কেউ নামের আগে কিংবা নিজেকে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন না । তবে কিছু ডিপ্লোমাধারী নিজেকে “ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার” হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন।

আসুন দেখে নিই তারা কারা:

১.স্বীকৃত কোন পলিটেকনিক বা কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রকৌশল বিষয়ে ডিপ্লোমা থাকে ।এবং

২. ইনস্টিটিউশন অফ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ-থেকে নিবন্ধিত হন । এর বাইরে দুই মাস/ ছয় মাস/ ২ বছরের কোর্সকরে কেউ নিজেকে ইঞ্জিনিয়ার পরিচয় দিতে পারে না ।

এটা অন্যায় এবং দন্ডনীয় অপরাধ। সাথে সাথে এটা ইঞ্জিনিয়ার পদবী’র অপমান এবং মানুষকে ধোকা দেয়া।

“পুনশ্চঃ প্রশ্নের উত্তরের জন্য কথাগুলো বললাম। কাউকে ছোট করা আমার উদেশ্য নয়। সবাই তার নিজের পজিশনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।।”

লেখক: HAMID

যোগ দিন ইঞ্জিনিয়ারদের কমিউনিটি গ্রুপে