আইনজীবীরা আশঙ্কা করছেন যে তাদের মক্কেলরা ন্যায়বিচার পাবেন না। আর এ কারণেই তারা মামলাটি অন্য একটি আদালতে স্থানান্তরিত করতে চান

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার ২২ আসামি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারকের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেছেন।

বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) আসামিদের আইনজীবী এ বিষয়ে একটি আবেদন জমা দিয়ছেন যে, বিচারক তাদের জবানবন্দি সঠিকভাবে রেকর্ড করা হয়নি।

 

আবরার ফাহাদ মর্গে

আবরার ফাহাদ মর্গে। ছবিঃ ঢাকা ট্রিবিউন

আইনজীবী মামলাটি হস্তান্তর করতে হাইকোর্টে আবেদন জমা দেবেন বলে আবেদনে বলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার আসামিপক্ষের আইনজীবীরা মামলার কার্যক্রম দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিতের আবেদন করেন। পরে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান আবেদনের বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ৬ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন।

আবরার হত্যায় জড়িতদের প্রাথমিক তালিকা ও ছবিঃ

আবরার হত্যায় জড়িতদের প্রাথমিক তালিকা ও ছবি

মামলায় অভিযুক্ত তিন আসামি মুনতাসির আলম জেমি, ইফতি মোশাররফ সাকাল, এবং মেহেদী হাসান রবিনের আইজীবী আমিনুল গণি টিটো বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আবেদনে বলা হয়েছে, আইনজীবীরা আশঙ্কা করছেন যে তাদের মক্কেলরা ন্যায়বিচার পাবেন না। আর এ কারণেই তারা মামলাটি অন্য একটি আদালতে স্থানান্তরিত করতে চান।

আইনজীবী টিটো বলেন, যে ৩৩ নম্বরের সাক্ষী ইতোমধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন এবং মামলায় তার জেরা সম্পন্ন হয়েছে।

“তবে তার জবানবন্দি আজ “বৃহস্পতিবার) আমাদের না জানিয়ে রেকর্ড করা হয়েছে। সুতরাং, আমরা মনে করি এটি আসামিদের ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য একটি বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। এটি আমাদের বিচারকের উপর অনাস্থা প্রকাশ করার কারণ ছিল” বলেন টিটো।

আবরারের

সিসিটিভি ফুটেজের দৃশ্য

এ দিকে, আজ আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন আলোকচিত্র বিশেষজ্ঞ কেএম নাজমুল ইসলাম। আদালত পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৬ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছে।

এ নিয়ে মামলায় মোট ৬০ সাক্ষীর মধ্যে ৪০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলো।

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার জেরে বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে নিজেদের কক্ষে ডেকে নেয় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী। এরপর রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দোতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। একই বছরের ১৩ নভেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান।

চলতি বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

লেখা:  মো. সানাউল ইসলাম টিপু