স্থাপত্য
প্রথমেই বলে নেই আর্কিটেকচার কিন্তু প্রকৌশল নয়। আবার আর্কিটেকচার কোন সাবজেক্ট ও নয়। তাহলে আর্কিটেকচার কী?
এর উত্তর হয়ত ১০ বছর এই ক্ষেত্রে থেকেও বুঝা যাবে না। ছাত্র হিসাবে আর্কিটেকচার যতটা পড়া তার চেয়ে বড় হল লাইফ স্টাইল। সেটা কেমন?

এটাও বলার নয় দেখে অণুকরণ করার নয় নিজে নিজে গড়ে নেবার ব্যাপার। সেটা কীভাবে কেন কোথায় এর উত্তর কেবল যিনি কাজটি করছেন তিনিই দিতে পারেন।
তাহলে আর্কিটেকচারে কী পড়ায়?

বিল্ডিং ডিজাইন করা?
নিশ্চয়ই। তবে সেটা সামান্য পার্ট মাত্র।
আর্কিটেক্ট কী করে? বিল্ডিং ড্রইং করে। সেটা সবাই পারে না ঠিকই।
কিন্তু সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বা নিয়ম জানা সাধারণ মানুষ ও পারে। তবে কেন এদের দরকার? আর শুধু কী এই ই করে? প্রশ্ন অনেক উত্তর সামান্য।

এসবই নিজের এক্সপ্লোর করার ব্যাপার। এটুকু বলে দেয়া যায় একজন আর্কিটেকচার ছাত্রের জন্যে জীবন,প্রকৃতি আর মানুষ হল পড়ার বিষয়। এর সাথে সম্পর্কিত যা যা হতে পারে সবই এখানে পড়ানো হয়।

ডিজাইন করা আর তাকে ডেভেলপ করা এটাই মূল কাজ। ডিজাইন যে কোন বিষয় এর হতে পারে।
চাকরী নিয়েও কিছু বলা যাবে না। এমনকী তুমি আর্কিটেক্ট হবে কী না তাও না।
বেতন বা এরকম ব্যাপার নিয়ে কথা বলা বোকামি। তবে যারা ভাব যে “না খেয়ে মরতে হবে” তাদের দ্বিধাহীন কন্ঠ্যে শুধু বলতে পারি “না।”

এবার আশা যাক কী কী চাই।
অসীম ইচ্ছা, পরিশ্রমী মানসিকতা, Ambition, fitness আর নিজেকে প্রকাশ করার ইচ্ছা ও ক্ষমতা।
এটা পর্যাপ্ত জ্ঞান সম্পন্ন যে কেউ স্বীকার করবে যে জগতে যত বিদ্যা আছে যা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান হয় তার মাঝে আর্কিটেকচার শেষ করা সবচেয়ে কঠিন।

আর কী যোগ্যতা লাগে? ভাল আকতে পারা? হলে ভাল। না হলে খারাপ তাও না। তবে অল্পতে তুষ্ট না হওয়া, মূলের বা সাধারণের বাইরে চিন্তা করা এবং কখনো হার না মানার মত মন দরকার।
শিক্ষার প্রসেসটা খুব দ্রুত না। আবার অল্প সময়ে অমানুষিক পরিমান চাপ নিতেও হয়। সুতরাং যা সবচেয়ে আগে চাই তা হল “ আমি আর্কিটেকচারই পড়তে চাই” এই ইচ্ছা। আমি আবারো বলছি আর্কিটেকচার তোমাকে কোথায় নিয়ে যাবে আমি জানি না, কীভাবে যাবে তাও না। তবে যেতে হবে নিজেকে আর রাস্তাটা যথেষ্ট কঠিন।
ভাল কিছু কথা না বললে কেউ সেই ইচ্ছাটা পাবে না। আর্কিটেকচারের শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিত্ব, চিন্তাধারা, জীবন যাপন থেকে জীবিকা সব এই বিষয়ের blessing বলা যায়।

জিজ্ঞাসা করলেই জানবে এই ডিপারর্টমেন্ট যেখানেই আছে সত্যিকারের আনন্দ আর জীবন সেখানে খুজে পাওয়া যাবেই। জানা ও শেখার পরিধিতে যে কোন মানুষের সাথে পাল্লা দিতে পারে একজন আর্কিটেক্ট।

ধরা যাক একটা স্কুল ডিজাইন করতে হবে। বাচ্চা থেকে টিন এজার দের মানসিকতা, শিক্ষকের শিক্ষাদানের উপায় থেকে শুরু করে দেশের ও বিশ্বের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে দিনের পর দিন কাজ করে যেতে হয়।
যেটা অনেক শিক্ষাবিদ ও করেন না অনেক সময়। এবং কাজটা সহজ নয়।

৫ বছর প্রায় ২০০ ক্রেডিট এর মাঝে ইতিহাস থেকে ইলেক্ট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকানিকাল থেকে সিভিল সব যেমন আছে ডিপার্টমেন্টের নিজস্ব সাবজেক্ট এর বৈচিত্র যে কাউকে মুগ্ধ করে দেবে।
যেমন শুধু গান এর আসল স্বাদ বোঝার জন্যে ১.৫ ক্রেডিট এর কোর্স আছে এতে। এটা শুধুই সামান্য চিত্র দিচ্ছে কেবল। এমন অনেক মজায় অনেক ব্যাথায় ভরা এক জীবনের নাম আর্কিটেকচার।

এখানে বন্ধু মানে পরিবার হয়ে ওঠে, জীবন মানে প্রজেক্ট হয়ে যায়,অস্বাভাবিক খুব স্বাভাবিক হয়ে যায় আর শেষে সৃষ্টির অর্থ খুজে বের করা মাঝে মাঝে যায়।
এটাই মজা, এটাই উৎসাহ। আর্কিটেকচার শুধুই তাদের যারা এটা করতে চায়।

কি কাজ করেন একজন আর্কিটেক্ট :-
ভবন ও কাঠামোরনকশা ও পরিকল্পনা করে নির্মাণ উপকরণের উপযুক্ত করে,পাশাপাশি ক্লায়েন্টের পছন্দের প্রতিও লক্ষ্য রাখে।

একজন আরকিটেক্ট উন্নয়নের যে কোন পর্যায়ে অংশগ্রহন
করতে পারে, নির্মানের প্রাথমিক পর্যায় থেকে শুরু করে।তাদের কাজ
নানা মুখী দক্ষতার দাবী রাখে যেমন; ডিজাইন, ইঞ্জিনিয়ারিং,ব্যবস্হাপনা এবং সুপারভাইজিং। সৃজনশীল নকশা
কিছু আরকিটেক্ট নকশার কাজ মনোযোগ দিয়ে থাকে।

  • নকশা একইসাথে শৈল্পিক ও বৈজ্ঞানিক উভয় দক্ষতাকে অর্ন্তভূক্ত করে, এছাড়াও এমন কিছু গঠন করে যা টেকনিক্যালি সম্ভবপর।
  • তারা তাদের ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে নির্দেশাবলীর একটি সেট উপর কাজ করে আনুমানিক বাজেট উপর প্রয়োজনীয় নির্মাণের ধরণ অনুযাযী আবাসিক, বাণিজ্যিক বা শিল্প বা একটি সম্পূর্ণ হাউজিং বা শিল্প এলাকা নিয়ে কাজ করে।
  • প্রকল্পের শুরু থেকে নকশা বা বিদ্যমান কাঠামো পরিবর্তন অথবা পরিবর্ধন করতে পারেন।
  • আইডিয়া নিয়ে আলোচনা এবং তা অনুমোদন করা।
  •  স্কেচ এবং আকারের বিশদ বিবরণসহ পরিকল্পনা বিশেষ নির্দিষ্টকরণ করা এবং বিল্ডিং উপকরণ বাবদ প্রাক্কলিত খরচ নির্ধারন করা।
  •  প্রজেক্টের উচ্চ মাত্রার গ্রাফিক্স প্রস্তত কর।
  •  বিল্ডিং এর অন্তর্বতী নকশা প্রস্তুত করণ।
  •  কাজটি একজন স্থপতি কতৃর্ক এককভাবে,সামষ্টিকভাবে,আথবা স্থাপত্য-বিষয়ক টেকনিশিয়ানদের সাহায্য নিয়ে হতে পারে।এটা অনেকটা প্রতিষ্ঠান অথবা ফার্ম এবং গৃহিত কন্ট্রাক্টের উপর নির্ভর করে। ব্যবস্থাপনাগত এবং প্রশাসনিক দায়িত্ব
  •  স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে বিল্ডিং তৈরীর অনুমতি নেয়ার ব্যবস্হা করা।
  •  ঠিকাদার,সিভিল ইঞ্জিনিয়ার স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার এবং সুপারভাইজারের সঙ্গে মধ্যস্ততা করে চুক্তি করা।
  •  নকশা উপস্থাপন এবং আনুমানিক ব্যয় হিসাব করা।
  •  সামগ্রিক দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসেবে স্থপতি সাইটে নিয়মিত ভিজিট করবেন, কাজের অগ্রগতিএবংমানচেক করবেন।
  •  সাইটের এবং এর উপকরণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
  •  ঠিকাদার / এজেন্টকে বিভিন্ন কাজের নির্দেশ দেয়া ও ঠিকাদার পেমেন্ট প্রত্যয়ন কারা।
  • নির্মাণ সম্পূর্ণ এবং ক্লায়েন্টের ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত সাইট ম্যানেজার এবং সিভিল বা স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার সঙ্গে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা। একজন স্থপতির কর্মজীবন
  • একটি স্হাপত্য প্রতিষ্ঠানের অধীনে শেষ শিক্ষাবর্ষে কার্যকরী শিক্ষানবিশ হিসাবে কাজ করা।
  •  গ্রজুয়েশনের পরে একটি স্হাপত্য প্রতিষ্ঠানের সাথে কিছু অ্যাসাইনমেন্টের তদারকি। একজন অগ্রজ স্হপতির অধীনে ডিজাইনের কলাকৌশল ও খুটিনাটি শিক্ষা করা।
  •  কয়েক বছরের শিক্ষানবিষীর পরে একজন স্হপতি ক্ষুদ্র প্রকল্প ও স্হাপত্য বিষয়ক পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করতে পারে।
  •  আরকিটেক্টে অভিজ্ঞ এবং সিনিয়র পেশাদারেরা বৃহত বরাদ্দকৃত কাজে কাজ করেন এবং সাধারণত এক দল জুনিয়র আরকিটেক্ট, স্থপত্যবিদ্যা বিষয়ক সহযোগি থাকে। সিনিয়র পরামর্শ দানকারিরা ম্যানেজার হিসাবে কাজ করে নিদের্শনা,তদন্ত এবং প্রধান প্রযুক্তিগত সমস্যার সঙ্গে তার আচরণ গত দিক,মূল্য নির্ধারন,আইনি সিদ্ধান্ত ইত্যাদি দেখে থাকে।জুনিয়র স্থপতিদের তাদের অবস্হানে পৌছতে ১০ বছর বা তার বেশি সময় লাগতে পারে।

 

কর্ম সংস্থানের সুযোগ.
—————————

• স্থাপত্য ডিজাইন সংস্হা সমুহ

• স্থাপত্য ও প্রকৌশল সেবা সংস্থা

• কেন্দ্রীয় গণপূর্ত বিভাগ

• সমবায় সমিতি

• উদ্যোক্তার উদ্যোগ

• সরকারি – শহুরে উন্নয়ন বিভাগ

• জাতীয় নির্মাণ প্রতিষ্ঠান
ইত্যাদি আয়ের সুযোগ

All Review of Architecture