আমেরিকাতে হায়ার স্টাডিজ করার যাদের প্ল্যান আছে, তাদের সবারই হায়ার স্টাডিজ এ খরচ কত লাগবে সেটা নিয়ে জিজ্ঞাসা থাকে। তাদের জন্য একটা জেনারেলাইজ সামারি। ইউনিভার্সিটি সিলেকশন, পার্সোনাল প্রেফারেন্স অনুসারে এই খরচটা কমবেশি হতে পারে, কিন্তু খরচের খাতগুলো মোটামুটি কন্সটান্ট থাকে।

আর এই সামারিটায় ধরে নিচ্ছি আপনি ফুল-ফান্ডিং এডমিশন এর অফার পেয়ছেন। অর্থাৎ, আপনার একাডেমিক এক্সপেন্স (Tuition and Fees), Health Insurance ইউনিভার্সিটি বহন করবে এবং সেই সাথে রিসার্চ এসিস্ট্যান্ট/ টিচিং এসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করার জন্য আপনি মান্থলি স্টিপেন্ড (বেতন) পাবেন।

টোটাল খরচটাকে চারটা ধাপে ভাগ করা যেতে পারে।
১। এডমিশন প্রিপারেশন এক্সপেন্স,
২। ভিসা এপ্লিকেশন এক্সপেন্স,
৩। ভিসা ইস্যু পরবর্তী এক্সপেন্স,
৪। আমেরিকাতে পৌঁছানো পরবর্তী এক্সপেন্স।
১। এডমিশন প্রিপারেশন এক্সপেন্স (Admission Preparation Expenses):

হায়ার স্টাডিজ প্রিপারেশনের একদম শুরুর দিকে GRE, IELTS/TOEFL এক্সামগুলো দিতে হয়। এখন যদিও অনেক ইউনিভার্সিটিতে এপ্লিকেশন এর সময় GRE এক্সাম অপশনাল করে দিয়েছে, তবে GRE স্কোর থাকলে গ্রাড-প্রোগ্রামে (MS/PhD) এপ্লাই করার সময় হাতে বেশি অপশন থাকে। ল্যাঙ্গুয়েজ টেস্ট IELTS বা TOEFL এর যেকোনো একটি দিলেই হয়। GRE দিতে $220 এবং IELTS/TOEFL এক্সামে $205 করে খরচ হবে।

GRE, TOEFL/IELTS স্কোর পেয়ে গেলে এরপরের কাজ আপনার প্রেফারড ইউনিভার্সিটিতে এপ্লাই করা। ইউনিভার্সিটিতে এপ্লিকেশন ফি $70 থেকে $150 এর মধ্যে ভ্যারি করে, এর সাথে GRE, TOEFL/IELTS স্কোর পাঠানোর খরচ যুক্ত হয়।

সবমিলিয়ে অন এভারেজ একটি ইউনিভার্সিটিতে এপ্লিকেশনের জন্য প্রায় $120 করে খরচ হতে পারে। কেউ যদি ১০টি ইউনিভার্সিটিতে এপ্লাই করে, সেক্ষেত্রে এই খরচটা ১০ গুন হবে। অনেক ইউনিভার্সিটিতেই এপ্লিকেশন ফী ওয়েইভ করার সুযোগ দেয়, ফিনান্সিয়ালী ক্যাপাবল না হলে এটার মাদ্ধমে এপ্লিকেশন ফি এর খরচটা কমিয়ে ফেলা যায়।

Admission Preparation Expenses
= GRE Exam Fee + IELTS/TOEFL Exam Fee + n x Grad Application Fee per University. (n= Number of Applications)
= $220 + $205 + n x $120

২। ভিসা এপ্লিকেশন এক্সপেন্স (Visa Application Expenses):
কাঙ্ক্ষিত ইউনিভার্সিটি থেকে এডমিশন/ অফার লেটার পেয়ে গেলে পরের কাজ ভিসা এপোয়েন্টমেন্ট এর জন্য এপ্লাই করা। ভিসা এপোয়েন্টমেন্ট এর খরচ টা প্রতি বছর চেঞ্জ হয়, ২০২৩ এ এটা $185 ছিল। এর সাথে SEVIS Fee দিতে হয়। SEVIS Fee এর জন্য $350 দিতে হবে।

Visa Application Expenses
= Visa Appointment Fee + SEVIS Fee
= $185 + $350

৩। ভিসা ইস্যু পরবর্তী এক্সপেন্স (Post Visa-Approval Expenses):
ইউএস এম্বাসি থেকে ভিসা এপ্রুভ হয়ে গেলে প্রথম কাজ এয়ার টিকেট কনফার্ম করা। আপনার ডেস্টিনেশন, কোন সময়ের ফ্লাইট ধরবেন , এগুলোর উপর ডিপেন্ড করে এয়ার ফেয়ার এর খরচ টা ভালোরকম ভ্যারি করতে পারে। এয়ারলাইন্সগুলোতে টিকিট রিস্কেজুল করার অপশন থাকে, তাই টিকেট যত দ্রুত সম্ভব কেটে ফেলা উচিত। ধরে নিচ্ছি, এটার জন্য অন এভারেজ প্রায় $1,000 এর মতন খরচ হবে।

ইউনিভার্সিটিতে এডমিশন কনফার্ম করার সময় সার্টিফিকেট, ট্রান্সক্রিপ্ট মেইল (DHL/FedEx) করতে হয়। এটার জন্য $40 খরচ হতে পারে। প্রায় সব ইউনিভার্সিটিরই হেলথ/ভ্যাক্সিনেশন রিকোয়ারমেন্টস থাকে। দেশে থেকেই ভ্যাক্সিনেশনগুলো কমপ্লিট করে যাওয়া ভালো। এটার জন্য $150 এর মতন খরচ হতে পারে। আমেরিকাতে যাবার আগের সর্বশেষ খরচের খাত হচ্ছে শপিং। শপিং এর খরচ পার্সোনাল প্রেফারেন্স ওয়াইজ অনেক বেশি ভ্যারি করতে পারে। অন এভারেজ $500 এর শপিং উইল বি এনাফ।

Post Visa-Approval Expenses
= Air Fare + Documents Mailing + Vaccination + Shopping
= $1,000 + $40 + $150 + $500

৪। আমেরিকাতে পৌঁছানো পরবর্তী এক্সপেন্স (Expenses after reaching USA):
আমেরিকাতে পৌঁছানোর পর ব্যাঙ্ক একাউন্ট করা, SSN রেডি করা এসবে ১-২ সপ্তাহের মতন সময় লাগে, একারনে প্রথম মাসের বেতন পেতে কিছুটা দেরি হতে পারে। প্রথম মাসের জন্য বাড়িভাড়া, অ্যামেরিকাতে পৌঁছে নতুন বাসায় উঠার পরে সেটার জন্য আরেক ধাপ কেনাকাটা করতে হবে সেটা, হাতখরচ… এসব মিলিয়ে $2,000 এর মতন সাথে নিয়ে গেলে ভালোভাবে সেফ থাকা যায়।

Expenses after reaching USA
= $2,000
———————————————————

এই চারটা ধাপে সর্বমোট খরচের পরিমাণটা হয়ঃ
= $4,650 + n x $120 [ $120 = Avg Application Fee per University ]

কেউ যদি ১০টা ইউনিভার্সিটিতে গ্রাড প্রোগ্রামে এপ্লাই করে সেক্ষেত্রে মোট খরচের পরিমাণটা হয় $5,850. বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের বর্তমান ডলার রেটে টাকায় এই খরচটা দাড়ায় প্রায়ঃ ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

আবারো বলি, এটা খুবি জেনারেলাইজ ভাবে করা একটা এস্টিমেট। আপনি কোন প্রোগ্রামে, কয়টি প্রোগ্রামে, কোন ইউনিভার্সিটিতে এপ্লাই করছেন, আপনার প্রেফারেন্স… এসবের উপর বেজ করে এই খরচটা ভ্যারি করবে। পারশিয়াল ফান্ডেড বা সেলফ ফান্ডেড স্টুডেন্টদের ক্ষেত্রে উপরের খরচগুলোর সাথে আপনার একাডেমিক এক্সপেন্স, লিভিং এক্সপেন্স, হেলথ ইনস্যুরেন্স এসব যুক্ত হবে।

Written by: Shaid Hasan,
PhD Student, Computer Science, University of Virginia