দেখুন বিসিএস আর বাকি ৮-১০ টি পরীক্ষা থেকে একটু আলাদা। আপনি বিসিএস ক্যাডার হয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জণগণের সেবা করবেন পাশাপাশি আপনি একজন ক্যাডার হবেন মানে আপনি এমন একটা কমিউনিটিতে নিজেকে যুক্ত করবেন যারা সরকারের উন্নয়ন ও বিভিন্ন নীতিমালা বাস্তবায়নের জন্য বিশেষায়িত বেতনভোগী বাহিনী।

আমরা যদি গত ৪-৫ টা বিসিএস পরিলক্ষণ করি তাহলে দেখব প্রতিবছর বিসিএস পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বহুসংখ্যায় বাড়ছে। ৪১ এ আবেদনকারীর সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ ৭৫ হাজার, এ বছর ৪৩ তম তে প্রায় ৪ লাখ ২৫ হাজার, ৪০ তম তে ছিল ৪ লাখ ১০ হাজার। সংখ্যাটা একবার দেখুন। কোন লেভেলের হাইপ। এরা কিন্তু ভাই সবাই স্নাতক বা সমমান ডিগ্রিতে পাস করা। আসুন এইবার দেখি ক্যাডার সংখ্যা কত? ৪০ এ ১৮০০+, ৪১ এ ২০০০+, ৪৩ এ ১৯০০ + তারমানে ক্যাডার সংখ্যা কিন্তু ১৮০০-২০০০ এর মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে। সুতরাং আপনাকে এই ২ হাজারের মধ্যেই অবস্থান করতে হবে। যদিও নন-ক্যাডারে ৩৮ তম তে প্রায় ১৫০০ জনকে ১ম শ্রেণীর পদে সুপারিশ করা হয়েছে। এটা একটা খুব ভরসার জায়গা। সহজ কথায় আপনি এই ২০০০ জনের মধ্যে আসতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে একটু স্পেশাল হতে হবে।

আমি বলব আপনি ব্যাসিকের দিকে নজর দিন। যেমন: ইংরজি, গণিত, বাংলা ব্যাকরণ, বিজ্ঞান, আইসিটি, মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান, ম্যাপ ইত্যাদি। পাশাপাশি কিছু মুল বই পড়া, মুক্তিযুদ্ধের উপর বই পড়া, নিয়মিত পেপার পড়া, বৈশ্বিক খবর রাখা সেগুলো বিশ্লেষণ করা ইত্যাদি।

ব্যাসিক ক্লিয়ার করে পরীক্ষার জন্য যখন আদা জল খেয়ে প্রিপারেশন নিতে থাকবেন দেখবেন সবকিছু সহজও লাগবে আবার পড়েও মজা পাবেন। শুধু প্রিলি বা ভাইভার জন্য একক ভাবে প্রিপারেশন না নিয়ে রিটেন, প্রিলি দুইটার জন্য একবারই প্রিপারেশন নিন এবং সেটি যেন সন্তুষ্টিমূলক প্রিপারেশন হয়।

সুশান্ত পাল বিসিএসের জন্য অনেক পড়াশোনা করতেন কারণ তিনি চাইতেন যে এই পড়াশোনাটা তার যেন আর না করা লাগে।

দেখেন অনেকেই বলবে ভাই গাইড মুখস্থ কর। ভাই একটা জিনিস ভাবুন তো যে ৪-৫ বার রিটেন দিয়েও ক্যাডার পাচ্ছে না তার কি গাইড কম মুখস্থ করা আছে।

কিন্তু অনেকেই প্রথমবারই ক্যাডার হচ্ছেন তাদের এই বিসিএস জার্নি শুনুন দেখবেন তারা কিন্তু অনার্স বা মাস্টার্স করার সময় নিজের একাডেমিক পড়াকেই গুরুত্ব দিয়েছে কিন্তু তারা ব্যাসিক বিভিন্ন বই পড়ত বা তাদের পড়াশোনার আলাদা টেকনিক ছিল এজন্যই তারা অন্যদের চেয়ে আলাদা।

এখন থেকেই নিজেকে আপডেট করুন, নিজের ব্যাসিক স্ট্রং করুন, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গভীর পড়াশোনা করুন আর নিজের একাডেমিক পড়াশোনায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিন।

একটা ঘটনা বলে শেষ করি। ৩৭ তম বিসিএস পরীক্ষার ভাইভা চলছে সবাই খুব চিন্তিত, বিভিন্ন জন ভাইভা দিয়ে আসছে আর বলতিছে এটা পারিনাই ওটা পারিনাই তো এই জাতীয় প্রশ্নগুলোর সকল উত্তর এক পরীক্ষার্থী (যার এটি শেষ বিসিএস) তিনি উত্তরগুলো দিচ্ছিলেন।

তো তিনি যখন ভাইভা বোর্ডে গেলেন তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো কোন ডিপার্টমেন্টের সে? সে বলল পদার্থবিজ্ঞান বা (physics) এর তো সেই বোর্ডে physics এর একজন প্রফেসর ছিলেন যিনি তাকে physics এর কিছু ব্যাসিক প্রশ্ন করা শুরু করল কিন্তু সেই পরীক্ষার্থী ভাইটি কোন প্রশ্নের তেমন উত্তর দিতে পারলেন না।

কারণ তিনি নাকি তার একাডেমিক পড়াশোনা বাদ দিয়ে প্রথম থেকে শুধু বিসিএসের পড়াই পড়তেন। তো যাই হওয়ার তাই হলো সেই ভাইটির চাকরি হয় নি।

কিন্তু বিসিএসের সাধারণ জ্ঞান সম্পর্কে তার অগাধ জ্ঞান ছিল। এই গল্পটি বলেছিলেন ৩৭ তম বিসিএসে পররাষ্ট্র ক্যাডারে ১ম স্থান অর্জনকারি রহমত আলী শাকিল। তার এক সাক্ষাৎকারে এটি শুনেছিলাম।

In the picture,
Rahmat Ali Shakil
Assistant Secretary
Ministry of Foreign Affairs
BCS (Foreign Affairs), 37th BCS