ভাইয়্যা…হাসান স্যার কিংবা গাজী আজমল স্যারের বই পড়ে ফাটিয়ে দিয়েছি কিন্তু মেডিকেলে চান্স হয়নি!!! চেয়েছিলাম ডাক্তার হয়ে দেশের সেবা করবো,ইচ্ছা পূরণ হলোনা। তাহলে বলবো মাইক্রোবায়োলজি সাব্জেক্টটি তোমার জন্য। 👌👌
তুমিকি কখনো চিন্তা করেছো- পুঁচকে ব্যাকটেরিয়াগুলো, বিশালদেহী মানুষ, প্রানী কিংবা বড় বড় উদ্ভিদগুলোকে খেয়ে ফেলতে পারে?
যদি সত্যিই খেয়ে ফেলে, তাহলে এর পিছনে অবশ্যই একটা রহস্য আছে। আর এর রহস্যটাই হল মাইক্রোবায়োলজি বা অনুজীববিজ্ঞান।
মাইক্রোবায়োলজি হল বিজ্ঞানের এমনই একটি শাখা, যেখানে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনুজীব (ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, শৈবাল, ছত্রাক ইত্যাদি) সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
প্রকৃতিতে তাদের বিস্তৃতি, তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক, অন্য প্রানীদের সাথে সম্পর্ক, মানুষ প্রানী এবং উদ্ভিদের উপর তাদের প্রভাব, পরিবেশে ভৌত ও রাসায়নিক এজেন্টদের প্রতি তাদের প্রতিক্রিয়া- ইত্যাদি সবকিছু জানার নামই হল মাইক্রোবায়োলজি।
মুলত অনুজীব থেকে ভ্যাক্সিন ও অ্যান্টিবায়োটিক, প্রোটিন, ভিটামিন ও বিভিন্ন এনজাইম তৈরীর পদ্ধতি জানা,আবার কোন সংক্রামক রোগ কোন জীবাণুর আক্রমনে হয়, কিভাবে এরা জীবদেহে রোগ সৃষ্টি করে, কিভাবে এরা মৃতদেহ পঁচিয়ে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে,এরা কিভাবে খাবারে পঁচন ধরায় বা খাবার নষ্ট করে, এবং কোন খাবারকে কিভাবে জীবাণুর আক্রমন থেকে রক্ষা করা হয় এসব কিছু জানার নামই হল অনুজীববিজ্ঞান।
সারা বিশ্বে অনুজীবদের সংখ্যা হল – ৫X(১০^৩০) টি বা ৫,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ টি। কথায় বললে – ৫ মিলিয়ন ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন।
অর্থাৎ এই অনুজীবরাই গোটা পৃথিবীকে ঢেকে রেখেছে। যেমন এরা ছড়িয়ে আছে বাতাসে, নদীতে, পুকুরে, মাটিতে, বৃক্ষ-বনে। আপনার হাতে পায়ে নাকে চুলে, ফুসফুস-পাকস্থলী তথা আপনার শরীরের স্কিনের ভিতরে ও বাইরে সর্বত্র এদের আধিপত্য।
এমনকি আপনার কাপড়ে, মানিব্যাগে, টাকার গায়ে, এটিএম বুথ কার্ডেও এদের রাজত্য।
কি! আশ্চর্য কিংবা রহস্যময় মনে হচ্ছে নিশ্চয়??
এই রহস্যের অনুজীবজগতে হারিয়ে যাওয়ার নামই হল অনুজীববিজ্ঞান।
ভাইয়া, সাব্জেক্টটি বাংলাদেশের কোথায় কোথায় পড়ানো হয়?
সরকারি:
১.ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
২.জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
৩.চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
৪.যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(JUST)।
৫.জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
৬.নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
বেসরকারিঃ
১. ব্রাক ইউনিভার্সিটি।
২. নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটি।
৩. স্টামফোরড ইউনিভার্সিটি।
৪. এসিয়া প্যাসিফিক ইউনিভারসিটি।
৫. প্রাইম এসিয়া ইউনিভার্সিটি।
৬. ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি।
৭.গণবিশ্ববিদ্যালয়।
ভাইয়া, বাংলাদেশে মাইক্রোবায়োলজির চাকরিক্ষেত্র সম্পর্কে কিছু বলুনঃ (job of microbiology in bd):
1.International Center
of DiarrhoealDisease Research in Bangladesh (ICDDR,B),
2.Bangladesh Council of
Scientific and Industrial Research (BCSIR),
3.Bangladesh Atomic Energy Commission (BAEC),
4. Pharmaceutical Industries- Quality control laboratory
5. Food Industries-Packaged food and Bakery industry
6. Fish Industries-Shrimp and Frozen fish industry
7. Beverage Industry-Soft drinks industry
8. Milk industry-Milk and Milk products
9. Drinking Water Sectors- Quality control of drinking water in bottles and cans
10. Water Supply Authority- QC of community water supply and sewage disposal.
11. Healthcare sector- Diagnostic centers and hospitals.
12. Institute of Public Health (IPH),
13.Bangladesh Jute Research Institute (BJRI)
14.Higher Education- Teaching in University.
15. All government jobs opened to science graduates.
মাইক্রোবায়োলজির বিস্তৃতি (Application of microbiology):
i. Research with biotechnological
applications of microbes in molecular biology:
Recombinant DNA technology, genetic
engineering.
ii. Diagnostic.
iii. Food industry
iv. Fermentation industry
v. Pharmaceuticals
vi. Fish industry
vii. Pollution control
viii. Environmental management
ix. Environmental health
x. General Health care
xi. Diagnostics
xii. Safe water system
xiii. Alternative energy source
xiv. Agriculture
xv. Biochemistry.
আমরা একসময় ওলাবিবি নামে একটা শব্দের ব্যবহার শুনতাম। কে ছিল এই ওলাবিবি? কি করত এই বিবি? যখন কোন পরিবারে ঢুকত তখন সেই পরিবারের কয়েকটা ব্যক্তিকে টার্গেট করে মেরে ফেলত।
কিন্তু এখন বিজ্ঞানের প্রসারনের ফলে জানতে পারছি, এটা কোন বিবি বা কারো বউ নয়। এটা একটা জীবাণু ; নাম – vibrio cholerae. এর আক্রমনের ফলে মানুষের কলেরা হত। আর বিজ্ঞানসম্মত যথাযথ চিকিৎসা না পেয়ে মানুষ তখন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ত।
আর একই পরিবারে এটা হওয়ার কারন হল- জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত একই খাবার পরিবারের সবাই গ্রহন করে, কিংবা পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে তাদের অজ্ঞতা। 👍👍👍👍👍👍👍👍👍
এই ওলাবিবিকে আর পাওয়া যায়না। কারন এখন আমরা পেয়েছি ভ্যাক্সিন (টিকা) ও এন্টিবায়োটিক (প্রতিষেধক) সহ নানান ঔষুধ।
তারপর সাম্প্রতিক ইবোলা মহামারী(২০১৪ইং সাল) সম্পর্কে সবারই কমবেশি জানা আছে।
গরীব দেশ গিনি, সিয়েরা লিয়ন, লাইবেরিয়া তে আঘাত হানা এই ভাইরাসটা এতো বেশি ছোয়াচে যে, প্রায় তিন মাসের মধ্যেই অসংখ্য(প্রায় দেড় হাজার) মানুষ মৃত্যুবরণ করেছিল, প্রায় ৩০০ স্বাস্থ্যকর্মীকে জীবন দিতে হয়েছে রোগীর সেবা করতে গিয়ে।
আমেরিকা ইউরোপে ইবোলা রোগের দু একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা পাওয়া গেলেও ধনী দেশ হওয়ায় প্রাথমিক চিকিতসাতেই এই রোগ নিয়ন্ত্রনে আনা সম্ভব হয়েছিল।
কিন্তু এই তিন দেশে যখন ইবোলাকে নিয়ন্ত্রনে আনা সম্ভব হচ্ছিল না, অন্যান্য দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়ার আশংকা ছিল এবং যখন সারা বিশ্বে এর কারনে আতংক ছড়িয়ে পড়েছিল, তখন অনুজীববিজ্ঞানী বা অনুজীববিদগণ বসে ছিলেননা।
তখন তারা ল্যাবে বসে প্রচুর সাধনায় মগ্ন – কিভাবে পৃথিবীর এই বিপুল সংখ্যক মানুষকে ছোট্ট একটি ভাইরাস থেকে পরিত্রাণ দেয়া যায়। অবশেষে অনুজীববিজ্ঞানীগণ প্রায় তিন মাসের সাধনায় মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তৈরী করে ফেললেন ইবোলা ভ্যাকসিন। এই অবদান রেখেছে বিজ্ঞানের যে শাখাটি, তা হল অনুজীববিজ্ঞান।
মাইক্রোবায়োলজিতে পড়ে টাকা উপার্জনের জন্য ভাবতে হবেনা। বাংলাদেশে প্রচুর জব রয়েছে মাইক্রোবায়োলজির। কিন্তু টাকা উপার্জনের চেয়ে বড় যে ব্যাপারটা আছে- সেটা হল মানবতার কল্যাণ সাধন। টাকা উপার্জনের একটা সীমা আছে আর তা সবার থাকা উচিত।
কিন্তু মানুষের জন্য কাজ করার কোন সীমা নেই। আপনি যখন একজন আগামীদিনের মাইক্রোবায়োলজিস্ট তখন শুধু একজন চাকরিজীবী হিসেবে পরিচয় দিয়ে নিজেকে বন্দি করবেননা।
নিজেকে একজন বিজ্ঞানী বা বিজ্ঞানমনস্ক ব্যাক্তি হিসেবে চিন্তা চিন্তা করুন। আপনিও কোন একটা অনুজীব নিয়ে কাজ করুন, যে কাজের ফসলে মানুষ উপকৃত হবে যুগ যুগ ধরে, শতাব্দীর পর শতাব্দী। হারিয়ে যান জ্ঞানের জগতে, নিত্য নতুন আবষ্কারের নেশায়।
আনন্দ সেখানেই। মুক্তি সেখানেই।
ভাল থাকবেন 🙂
Anjir Rumey,Jessore University Of Science And Technology(JUST) dept. of Microbilogy -9th batch