একজন সত্যিকার স্বপ্নদ্রষ্টার সবচেয়ে বড় গুণ হচ্ছে তিনি নির্ভীক। আর প্রতিযোগিতামূলক স্মার্টফোন বাজারে নতুন একটি স্মার্টফোন কোম্পানি গড়ে তোলার থেকে বড় নির্ভীকতা আর কীই–বা হতে পারে?
সহজ উত্তর-আর কিছুই না। বাণিজ্যিক ঝুঁকি ও ক্ষতির ঝক্কির চিন্তাই এমন সাহসকে দমিয়ে দিতে যথেষ্ট। কিন্তু একজন স্বপ্নদ্রষ্টা কোনো কিছুতেই পিছু হটেন না।
রিয়েলমির প্রতিষ্ঠাতা স্কাই লিও এমন ঝুঁকিই বেছে নিয়েছিলেন।
লি উপলব্ধি করেন যে তরুণদের অসামান্য সৃজনশীলতা প্রদর্শনের জন্য স্মার্ট ডিভাইসে অত্যাধুনিক ফিচার থাকা প্রয়োজন।
সেসব ফিচার সমৃদ্ধ স্মার্ট ডিভাইস তাদের হাতে তুলে দেওয়ার গুরুদায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেন স্কাই লি। ট্রেন্ডসেটিং স্টাইলে, শক্তিশালী ফিচারে তরুণদের জন্য স্মার্ট ডিভাইস নিয়ে আসার জন্য ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন রিয়েলমি।
আর তরুণদের অসামান্য ভালোবাসা অর্জন করে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই রিয়েলমি বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল স্মার্টফোন ব্র্যান্ডে পরিণত হয়।
প্রতিটি নতুন উদ্যোগের পেছনেই থাকে নানা সংগ্রাম এবং স্কাই লির ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। তবে খুব অল্প বয়সেই পাথর ভাঙা শ্রমিক পিতার থেকে পেয়েছেন কঠোর পরিশ্রম এবং ধৈর্যের শিক্ষা।
পশ্চিম চীনের সিচুয়ান প্রদেশে জন্মগ্রহণ করা লি ২০০০ সালে নানজিং ইউনিভার্সিটি অব এরোনটিক্স অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনটিক্স থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করে বিবিকে ইলেকট্রনিকস গ্রুপে যোগ দেন।
কাজের ক্ষেত্রে অনন্য নৈতিকতা এবং প্রযুক্তিগত জ্ঞানের উৎকর্ষে যোগদানের পর খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তাঁকে প্রধান প্রকৌশলী এবং ডেভেলপমেন্ট সুপারভাইজার পদে উন্নীত করা হয়।
পরে তিনি কোম্পানির ‘আর অ্যান্ড ডি’ প্রকল্পের ব্যবস্থাপকদের প্রথম ব্যাচ গঠন করেন।
২০১৩ সালের অক্টোবরে একটি ব্যবসায়িক সফরে লি সেখানকার তরুণদের ব্যবহৃত বাজেট স্মার্টফোনের নকশা ও কার্যকারিতার উন্নতির বড় রকমের সুযোগ আবিষ্কার করেন।
অনেক ব্র্যান্ড নানা দামে বিভিন্ন স্মার্টফোন নিয়ে এলেও তরুণেরা তাঁদের জন্য সব প্রয়োজনীয় ফিচারের নিখুঁত স্মার্টফোন খুঁজেই যাচ্ছিলেন।
লি তরুণদের কল্পনা ও বাস্তবতার মাঝে ফারাক কমিয়ে আনতে ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে রিয়েলমি প্রতিষ্ঠা করেন।
এর মাত্র এক সপ্তাহের ভেতরেই কোম্পানিটি এর প্রথম স্মার্টফোন বাজারে আনে। তরুণদের প্রয়োজনীয়তা প্রাধান্য দিয়ে বাজারে আনা রিয়েলমি ২–এর দাম ছিল মাত্র ১২০ ডলার এবং ফ্লিপকার্টে মাত্র ৫ মিনিটে দুই লাখ ইউনিট বিক্রি হয়।
বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল স্মার্টফোন হওয়ার যাত্রায় এরপর আর রিয়েলমিকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আটটি দেশের বাজারের কার্যক্রম মাত্র আটজন সদস্য নিয়ে শুরু করে রিয়েলমি এখন অনেক দূর পৌঁছে গেছে।
এ ক্ষেত্রে রিয়েলমি ব্র্যান্ড পজিশনিং, পণ্য এবং চমৎকার বিক্রয় মডেল এ ৩টির ওপর গুরুত্ব দিয়ে মাত্র দুই বছরের মধ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী ৬১টি দেশে পৌঁছে গেছে।
চলতি বছরে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করে কাউন্টার পয়েন্টের সমীক্ষা অনুসারে তৃতীয় প্রান্তিকেই রিয়েলমি দেশের শীর্ষ চার মোবাইল ব্র্যান্ডের ১টিতে পরিণত হয়েছে।
রিয়েলমির স্লোগান ‘ডেয়ার টু লিপ’ তরুণদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার অদম্য চেতনাকে তুলে ধরে।
তরুণদের প্রতিটি প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ব্র্যান্ডটি নিশ্চিতভাবে নিজেদের একটি তারুণ্যদীপ্ত ব্র্যান্ড হিসেবে জাহির করতে পারে।
ব্র্যান্ডটির কর্মীদের গড় বয়স ত্রিশ বছরের কম এবং এই বিশাল কর্মশক্তি তরুণদের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয়তা বোঝে।
রিয়েলমির এই অনন্য সাফল্যের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান স্কাই লির, যিনি সব সময় বিশ্বাস করে এসেছেন, সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ এবং পরিশ্রমই একটি তরুণ কোম্পানিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।
আর চোখধাঁধানো ডিজাইনে শক্তিশালী ফিচারের সব স্মার্টফোন এনে তরুণদের চাহিদা পূরণ করতে রিয়েলমি বদ্ধপরিকর।
এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে আগামীতে রিয়েলমি ফ্যানদের সঙ্গে নিয়ে বিশ্ববাজারে আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে চায় রিয়েলমি।
স্কাই লির দক্ষ নেতৃত্ব, তরুণ কর্মীদের অদম্য স্পৃহা এবং রিয়েলমি ফ্যানদের ভালোবাসায় স্মার্টফোনের জগতে রিয়েলমি শিগগিরই চালকের আসনে বসবে।