প্রশ্নটি অদ্ভুত। আর এ অদ্ভুত প্রশ্নটি উত্থাপন হচ্ছে এ কারণে—বিষাদগ্রস্ত মানুষরা স্বপ্ন দেখেন তিনগুণ, স্বাভাবিক মানুষের চেয়ে!

স্বপ্ন দেখেন সোহাগ ভাইও। নাহলে যেদেশের সংখ্যা গরিষ্ঠ মানুষ চাল-নুন-তেলের হিসাব মেলাতে বিমর্ষ, সবসময়; সেই দেশে তিনি বই বিক্রির স্বপ্ন দেখলেন! তাও পাঠ্য বই না, গল্প-উপন্যাস! এবং সাজানো-গোছানো দোকানে না, অনলাইন-এ!

এবং আরো চোখ বড় করে ফেলা ব্যাপার হচ্ছে—আগে মূল্য পরিশোধ করতে হবে না, বই পৌঁছে দেওয়া হবে বাসায়, হাতে পেয়ে তারপর…।
বিশ্বাস—যারা তার এই স্বপ্নের কথা শুনেছিলেন, এই দেশের আলোকে, কপাল কুঁচকে ফেলেছিলেন তারা।

আমি এও বিশ্বাস করি—কপাল কুঁচকাচ্ছেন তারা এখনও।

কারণ সংসারে আক্রান্ত সং সাজা মানুষগুলো এখন বই কেনা শিখছেন, কিনছেন—অনলাইনেই! তাইতো ‘রকমারি’ এখন অন্যরকম, বই সংক্রান্ত এক অন্যভূবন, বিশ্বস্ত এক অন্য আপন!

বিষাদগ্রস্ত মানুষরা সফল হতে পারে না, সোহাগ ভাই পেরেছেন। তার মানে তিনি বিষাদগ্রস্ত নন, ছিলেনও না। স্বপ্ন দেখা, আর তা হাতের মাঝে এনে খেলা করা—কতজন পারেন?

পারেন, কেউ কেউ। তাদের জন্য সেই সনাতন বাক্যটির সমাধান—পথিক পথ সৃষ্টি করে, না পথ পথিক সৃষ্টি করে?
পথিক পথ সৃষ্টি করে।

২।
শ্মশ্রুহীন সোহাগ ভাইয়ের সঙ্গে গল্প হয়েছে আমার, শ্মশ্রুমণ্ডিতের পরেও। একদিন সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে বলেছিলেন, ‘সুমন্ত ভাই, যদি আপনি স্বপ্ন দেখেন আপনার ঘরের দেয়াল প্রজাপতিতে ভরে গেছে, একদিন দেখবেন—সত্যি সত্যি ভরে গেছে প্রজাপতিতে।’

সম্ভব সোহাগ ভাই প্রজাপতির কথা বলবেন না আর এখন, অন্যরকম অন্যকিছু স্বপ্নের কথা বলবেন, যা তিনি দেখে আসছেন, দেখছেন—এবং স্বপ্নগুলো ঠিক হাতের তালুতে নিয়ে নয়, ল্যাপটপের স্ক্রিনেও নয়, সবার মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে স্বভাবজাত হাসছেন। যেমন তিনি নিজে রূপান্তরিত হয়েছেন, অলৌকিক রূপে রূপান্তরিত করেছেন অনেক মানুষকেও—পঠনে, স্বপ্নে, মননে।


‘রকমারি’ আজ ১০ বছরের—‘রকমারি দশক’।
তারপর একদিন—শতক হবে, ‘রকমারি শতক’। স্বপ্নটা সম্ভবত সোহাগ ভাইও দেখেন, আমরাও।
শুভ কামনা ‘রকমারি’, জীবনের সব শুভতায়।

লেখকঃ  সুমন্ত আসলাম

আরো পড়ুন একজন মাহমুদুল হাসান সোহাগ ও অন্যরকম গ্রুপ