আসুন একটা চোর ও তার পরিবারকে চিনে রাখি। ড. ইকবাল কবির। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক থেকে করোনা উপলক্ষ্যে যে অনুদান এসেছিলো সেই প্রকল্পের পরিচালক।

পুরো পরিবার

এপের নাম দিয়ে পাঁচ কোটি টাকা খরচ করেছে এই লোকই, জাদিদ অটোমোবাইল নামের একটা কোম্পানীকে পিপিপি সরবরাহের জন্য ৩১ কোটি টাকার কাজ দিয়েছে এই লোকই।

জাদিদ অটোমোবাইলস কোন পিপিপি না দিয়েই অলরেডি ৮ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে, ওদের পেছনে সাংবাদিকরা না লাগলে বাকি টাকাও তুলে নিতো।

প্রকল্পের মোট ২০০ কোটি টাকা সেই লুটপাট করেছে তার আত্নীয় স্বজনকে নিয়ে, সব কাজই করেছে কোন রকমে নিম্নমানের সামগ্রী গছিয়ে দিয়ে।

ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের ফান্ডের পুরো ২০০ কোটি টাকাই সে নয়-ছয়ও না, নয়-ষাট করেছে!

জাদিদ অটোমোবাইলের মালিক কাঞ্চন হচ্ছে তার ভায়রা ভাই। ভায়রার সাথে তার পারিবারিক ছবিও দিয়ে দিলাম একটা। তারা একসাথে ইন্ডিয়ায় ঘুরতে গিয়েছিল।

এই ইকবাল এর আগে একটা জলবায়ু প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক ছিল। সেখান থেকে তিনশো কোটি টাকা মেরেছে।

তার শ্বশুরবাড়িকে প্রকল্পের জন্য ভাড়া দেখিয়ে সেখানে ৫০ লাখ টাকা দিয়েছিল, তার বউয়ের গাড়ি প্রকল্পের জন্য ভাড়া করে সেখানে আরো লাখ লাখ টাকা তুলে নিয়েছিল।

সব মিলিয়ে সেই প্রজেক্টে তিনশো কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছিল।

যাইহোক তার শাস্তি কি হয়েছে জানেন? সে কেবল ওএসডি হয়েছে রিসেন্টলি।

সরকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এর চেয়ে বেশী কিছু করার ক্ষমতা সরকারের নাই। দুদকে তার নামে তদন্ত রিপোর্ট জমা হয়েছে।

এখন মামলা করলে দুদককেই করতে হবে। কিন্তু আনফর্চুনেটলি দুদক কখনোই এমন কোন কেসের বিহিত করেনা।

টাকা খেয়ে হালকা ধারায় একটা নামকাওয়াস্তে মামলা দিবে। সাম্প্রতিককালে দুদক যেসব মামলা করেছে তাতে কোন দুর্নীতিবাজের কোন শাস্তি হতে শুনেছেন?

এভাবেই আমাদের আমলারা একপ্রকার ইনডেমনিটি নিয়ে দেশ চালাচ্ছেন। শাহেদকে রিজেন্টের কাজ পাইয়ে দিয়েছিলেন সাবেক স্বাস্থ্য সচিব আসাদুল ইসলাম।

মনে আছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিবৃতি দিয়েছিলো উপরের আদেশে তারা রিজেন্টকে কাজ দিয়েছিল? এই উপরের আদেশ দেয়া লোকটিই আসাদুল ইসলাম। তার কি শাস্তি হয়েছে?

মন্ত্রীর পিছে আসাদুল ইসলাম

তিনি এখন পদোন্নতি পেয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সচিব। মন্ত্রীর পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটিই সেই সচিব আসাদুল ইসলাম।

এইসব দুর্নীতিবাজ আমলাদের কাছে মন্ত্রীরাও অসহায়। ইকবাল কবিরও সেই আসাদুল ইসলামের খাস চামচা, সেজন্যেই প্রকল্প পরিচালক হতে পেরেছিল।

রাজনৈতিক নেতারা হয়তো পাড়ায় পাড়ায় টেন্ডারবাজি করে, কিন্তু উপরে বসে সমুদ্র চুরি করে শিক্ষিত(!) আমলারা। এজন্যেই বিসিএসের এত কদর দেশে।

আমলাদের চুরি ঠেকানো না গেলে বাংলাদেশের এই সাম্প্রতিক দুর্নীতির বেড়াজাল থেকে মুক্তির কোন উপায় নেই।

এইসব চোরেদের বিরুদ্ধে আমরা আর কিছু করতে পারব না, সরকারও পারবে না, তাই চলেন এদের সামাজিক ভাবে হেয় করতে চোরের পরিবারকে ভাইরাল করি, দুধের সাধ ঘোলে মিটাই!

লেখা: শুভ কামাল

আগের লেখা: কেন হবেন বিসিএস ক্যাডার