CEE ডিপার্টমেন্ট নিয়ে inform করতে লেখাটা মূলত ২ ভাগে সাজাবো; প্রথম অংশে Civil Engineering এবং দ্বিতীয় অংশে IUT CEE নিয়ে।

Civil Engineering:
Civil Engineering হল পৃথিবীর প্রাচীনতম একটি প্রকৌশল শাখা। সেই পাথরের যুগে যেমন Civil Engineering ছিলো, যেখানে গুহামানবেরা গুহা বানিয়ে বসবাস করতো, ঠিক তেমনই, আজ যে বহুতল অট্টালিকায় বসে আপনি লিখাটি পড়ছেন, সেখানেও Civil Engineering আছে!

Civil বা পুরকৌশল হলো পেশাদার প্রকৌশল বিদ্যার একটি অন্যতম শাখা যেখানে Designing & Planning, Construction, Ecology & Environmental impact নিয়ে আলোচনা করা হয়।

Civil Engineering মূলত বিভিন্ন স্থাপনা যেমন ভবন, সেতু, রাস্তা, বাধ, পরিখা, স্তম্ভ ইত্যাদির Construction Process এবং Post-constructional Maintenance নিয়ে আলোচনা করে। তাছাড়া একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারকে Survey এবং Project Management কাজও করতে হয় সমান দক্ষতার সাথে।

Regular Structure (বাড়ি-ঘর, দালান-কোঠা, সড়ক-মহাসড়ক), Super Structure (ফ্লাইওভার, বাঁধ, ব্রীজ), Skyscrapers, Airports, Sewer System, Water Supply System, Waste disposal & Recycling System, Earthquake & Damage prevention, Structural & Environmental sustainability এই সমস্ত বিষয়ই Civil Engineering এর অন্তর্ভুক্ত।

সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বা পুরকৌশলী কি করে থাকে?

পরিকল্পনা, ডিজাইন, গঠন এবং রক্ষনাবেক্ষন করার কাজ করের সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। সিভিল ইঞ্জিনিয়ার জরিপের কাজ করে থাকে, প্রযুক্তিগত প্রতিবেদন দেয়, এমনকি প্রকল্প ব্যবস্থাপক এর কাজও করে থাকে।

সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এর পরিসর :
যেহেতু সময়ের সাথে সাথে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এর পরিসর বাড়ছে তাই এর অনেক শাখা বের হয়েছে। এদের উল্লেখযোগ্য হল স্ট্রাকচারাল, জিওটেক, ট্রান্সপোর্টেশন, হাইড্রোলিক, এনভায়রনমেন্টাল ইত্যাদি ।

সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এর গুরুত্ব এবং প্রয়োগ :
সময়ের সাথে সাথে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এর গুরুত্ব বাড়ছে। বর্তমানে তারা আগুন নিয়ন্ত্রণ নিয়েও কাজ করে। তারা আগুনে ক্ষয় ক্ষতি যেন কম হয় সেই বিষয়েও কাজ করে।

পুরাতন মিশর এর পিরামিড বা রাস্তা নির্মাণে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এর ভূমিকা উল্ল্যেখযোগ্য অবদান ছিল। প্রকৌশল বিজ্ঞান এর মধ্যে সবচেয়ে পুরানো হলো সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং। পানি, বাতাস এবং মাটি পরিশোধনের বিভিন্ন উপায় নিয়েও সজাগ।

সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রধান শাখাগুলি :
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রধান ৭ টি শাখা আছে নিচে এগুলো নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল:

STRUCTURAL ENGINEERING
বাড়ি, হোটেল, পার্ক, ব্রীজ, বিল্ডিং ইত্যাদির উপরে নিজস্ব ভার বা বাইরের ভার প্রতিরোধ ক্ষমতা সহ বাতাস, পানি, ভূমিকম্প, তাপমাত্রা ইত্যাদির প্রভাব থেকে রক্ষার জন্য cement, aggregate, reinforcement, অন্যান্য উপাদানের সমন্বয়ে সঠিক ডিজাইন করা হলো এই শাখার কাজ।

ENVIRONMENTAL ENGINEERING
পরিবেশ তথা বাতাস এবং পানির দুষণ রোধ, বিশুদ্ধকরণ ইত্যাদি করা এই শাখার কাজ। বর্তমানে এটি একটি গুরুত্বপুর্ন শাখা। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, বর্জ্য অপসারণ এবং বিশুদ্ধকরণ করা নিয়ে আলোচনা করা হয় এই শাখাতে।

GEO-TECHNICAL ENGINEERING
প্রায় সকল সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং শাখাতেই এটি কাজে লাগে। কারণ বেশির ভাগ স্ট্রাকচার ভুমির উপর অবস্থিত। মাটি বা পাথরের এর উপর স্ট্রাকচার এর প্রভাব এবং এদের বৈশিষ্ঠ্য নিয়ে আলোচনা করে এই শাখাটি।

ভুগর্ভের সিপেজ,ভুমিকম্পের প্রভাব, স্থিতিশীলতা ইত্যাদি নিয়ে কাজ করে এর সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং শাখাটি। বাঁধ, রিটেইনিং ওয়াল, ফাউন্ডেশন ইত্যাদির আংশিক ডিজাইন করা হয় এই শাখার মাধ্যমে।

WATER RESOURCE ENGINEERING
পানি আমাদের জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ন, আবার এই পানি আমাদের মরণও ডেকে আনতে পারে। পানি সম্পদ প্রকৌশল পানির ভৌত অবস্থা নিয়ে আলোচনা করে।

বন্যা, শহরের-কারখানা-সেচ এর পানি সরবরাহ, নদী ভাঙ্গন রোধ, নদীর শাষণ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা এবং ডিজাইন করে থাকে। হাইড্রোলিক পাওয়ার, বাঁধ, খাল ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করে এই শাখাটি।

TRANSPORTATION ENGINEERING
কোন সমাজের বৈশিষ্ঠ্য বা গুণ এর যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর নির্ভর করে। কোন সমাজের উন্নয়ন অনেকটা প্রভাবিত হয় এই যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর।

মানুষ, মালামাল ইত্যাদি পরিবহণ ব্যবস্থা নিয়ে গবেষণা, ডিজাইন, সমস্যা, সমাধান নিয়ে কাজ করে ট্রান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং। অল্প রাস্তায় অধিক পরিবহণ সুবিধা, দুর্ঘটনা কমানো, খরচ কমানো ইত্যাদি নিয়ে কাজ করে এই শাখাটি।

CONSTRUCTION ENGINEERING
এই শাখাতে আলোচনা করা হয় যে কি ভাবে একটি কাঠামো গঠন করতে হবে। অর্থের ব্যবহার, সময়ের সংক্ষেপন, প্রয়োজনীয় মালামাল-যন্ত্রপাতি ইত্যাদির যোগান, কাঠামো গঠনের পদ্ধতি বিজ্ঞান নিয়ে কাজ করা হয় শাখাতে।

URBAN & COMMUNITY PLANNING
নগরায়ণ এবং শহর পরিকল্পনা করা হয় মূলত একটি গোষ্ঠীকে কেন্দ্র করে। একটি গোষ্ঠীতে কি কি প্রয়োজন এবং কিভাবে সেসবের উপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করা যাবে তা নিয়ে গবেষণা করা হয় এই শাখাতে।

চাহিদা :
যে সকল বিষয়ের চাহিদা পূর্বেও সব সময় ছিল, এখনও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে তার মধ্যে সিভিল অন্যতম। এদেশে এখন অসংখ্য Real Estate বা Construction/Consultation ফার্ম আছে, যেগুলোতে প্রচুর সিভিল ইঞ্জিনিয়ার দরকার।

এছাড়াও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের সরকারি চাকরির সুযোগ অন্যান্য ইঞ্জিনিয়ারদের তুলনায় অনেক বেশি। অধিক জনবসতি, নগরায়ন ও আধুনিকায়নের এই যুগে সিভিলের চাহিদা নিয়ে প্রশ্ন তোলা অযৌক্তিক।

ভবিষ্যৎ :

উন্নয়নশীল দেশ হওয়ায় সিভিলের চাহিদা আছে এবং ভবিষ্যতে আরো বাড়বে। জলবায়ু পরিবর্তন সংশ্লিষ্ট সমস্যার কারণে পরিবেশ প্রকৌশলের প্রয়োজন বাড়ছে। পৃথিবী ধ্বংসের আগ পর্যন্ত নির্মাণ কাজ যেমন চলতেই থাকবে, পুরকৌশলীদের চাহিদাও ঠিক সেদিন পর্যন্তই থাকবে!

সহায়ক গুনাবলী :
বলবিদ্যায় ভালো দখল, ড্রয়িং, ডিজাইন কনসেপ্ট, পরিশ্রমী, দূরদর্শীতা প্রভৃতি।

কর্মক্ষেত্র :
সরকারি বিভিন্ন বিভাগ – সড়ক ও জনপদ বিভাগ, জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর, গণপূর্ত বিভাগ, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, আবহাওয়া অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন অধিদপ্তর প্রভৃতিতে প্রকৌশলী হিসেবে।

বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলায় নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে।

বিভিন্ন নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ- রাজউক, কেড

IUT CEE :

IUT তে CEE ডিপার্টমেন্ট চালু হয় ২০০৮ সালে। IUT CEE তে চার বছরে Total credit hours হলো ১৮১.০। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের CE প্রোগ্রাম থেকে IUT CEE তে total credit বেশি।

তাছাড়া, ডিপার্টমেন্টের ফ্যাকাল্টিগণ তাদের গবেষণার ফিল্ডে অনেক high profiled. নিয়মিত তাদের গবেষণাপত্র স্বীকৃত জার্নালগুলোতে প্রকাশিত হয়। এসব কারণে, ডিপার্টমেন্ট হিসেবে IUT CEE অনেক দৃঢ় ভীত গঠন করতে সক্ষম হয়েছে।

পাশাপাশি, IUT CEE নানান workshop, seminar এবং conference আয়োজন করে থাকে। ৩য় বর্ষে সকল শিক্ষার্থীদের জন্য আছে বাধ্যতামূলক Industrial Attachment.

IUT CEE course curriculum: https://cee.iutoic-dhaka.edu/curriculum

Lab Facilities :
ডিপার্টমেন্টে রয়েছে Concrete Lab, Geo-Tech Lab, Transportation Lab, Environmental Lab, Fluid Mechanics Lab, Cube Lab.

Club opportunities :
CEE ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে American Concrete Institute (ACI) IUT Student Chapter. ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ইতোমধ্যে Student chapter টি Excellent University হিসেবে Chapter recognition পেয়েছে।

তাছাড়া, Designing এর জন্য রয়েছে IUT CAD Society. পাশাপাশি অন্যান্য ক্লাবের সাথে যুক্ত হওয়ার সুযোগ তো থাকছেই।

CENNOVATION হল বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় Civil Engineering Technical Fest যেটা IUT CEE আয়োজন করে থাকে।

যেখানে Drafting Contest, Game of Trusses, Seismic Challenge, Perspective illustration সহ বেশ কিছু ইভেন্ট থাকে।

২০১৯ এ CENNOVATION এর ৭ম আসর আয়োজিত হয়।
Graduation শেষ করে CEE তে উচ্চ শিক্ষার বিস্তৃত সুযোগ রয়েছে । উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশ্বের বিভিন্ন সুপ্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ে পেয়ে যাবে CEE Alumni দের।

আনুমানিক ৫২% graduate বিদেশে উচ্চ শিক্ষার সাথে যুক্ত, আনুমানিক ২৬% graduate ফ্যাকাল্টি হিসেবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত, আনুমানিক ২০% বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত, তাছাড়া আনুমানিক ২% উদ্যোক্তা।

আশা করি, Civil Engineering এবং IUT CEE নিয়ে তোমাদের ধারণা দিতে পেরেছি।
Welcome to Red Heaven.
Congratulations to all of you.

190051227
Md. Zawad Rafid
IUT CEE’19

Read More